অংশগ্রহণমূলক কাজ ৬২

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - বৌদ্ধধর্ম শিক্ষা বৌদ্ধধর্মে পরমতসহিষ্ণুতা | - | NCTB BOOK
130
130

বিভিন্ন মতামত থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিজ্ঞতাটি লেখো।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

** এই পৃষ্ঠায় জায়গা না হলে একটি আলাদা কাগজে লিখে কাগজটি বইয়ের পৃষ্ঠার এক পাশে আঠা দিয়ে যুক্ত করতে পারি/খাতায় লিখতে পারি।

 

তোমরা ইতিমধ্যে গৌতমবুদ্ধের জীবন ও বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে জেনেছ। বুদ্ধ কোনো নির্দিষ্ট জাতি, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের জন্য আবির্ভূত হননি। তিনি ছিলেন জগতের সব সত্তার জন্য শান্তি ও কল্যাণকামী মহামানব। তাঁর কোনো বাণীর আবেদনও কোনো নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি ছিলেন সর্বজনীন মূল্যবোধের মূর্ত প্রতীক। সব সত্তার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গলই তাঁর ধ্যান, জ্ঞান ও দর্শনের মূল ভিত্তি। জগতের সবাই তাঁর আপন। তিনি সব সময় সব সত্তার কল্যাণেই নিবেদিতপ্রাণ। অপরের মত ও ধারণা তাঁর চিন্তার বিষয় নয়। অপরের মঙ্গল ও দুঃখমুক্তিই ছিল তাঁর ভাবনার বিষয়। তাঁর অন্তরে সব সময় বিরাজিত ছিল পরমতসহিষ্ণুতা।

 

 

পরমতসহিষ্ণুতা বলতে কী বোঝায়?

 

গৌতমবুদ্ধের আবির্ভাব খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে; প্রাচীন ভারতের সামাজিক সাংস্কৃতিক পরিবেশে। সে সময় জাতিভেদ ও বর্ণবৈষম্য প্রথার প্রচলন ছিল। শ্রেণি বিভাজনের প্রকোপ ছিল সমাজ প্রগতির প্রধান অন্তরায়। কিন্তু সে প্রাচীন কুসংস্কার গৌতমবুদ্ধকে স্পর্শ করেনি। তথাগত বুদ্ধ প্রচার করলেন মানুষে মানুষে কোনো ভেদ নেই। জন্ম দিয়ে মানুষের শ্রেণি বিভাজন হয় না। মানুষের প্রকৃত পরিচয় তার কর্মে। তিনি মনে করতেন যেকোনো ব্যক্তি জন্মগত পরিচয়ে ভিন্ন মতাদর্শের হলেও মানুষ হিসেবে সবাই অখণ্ড মানব সমাজের উপাদান। সে অর্থে মানুষ পরস্পর সম্পর্কিত ও নির্ভরশীল। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায় ও গোত্র ইত্যাদি ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট করার জন্য পরিচায়ক শব্দমাত্র। তথাগত বুদ্ধ সর্বজনীন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে আত্মসচেতন হতে পরামর্শ দিয়েছেন। আত্মপ্রদীপ প্রজ্বালনের কথা বলেছেন: বিবেক জাগ্রত করার উপদেশ দিয়েছেন। যার মাধ্যমে মানুষ নিজেকে চিনতে পারবে। নিজের দায়িত্ব-কর্তব্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে। সমাজে বসবাসের ক্ষেত্রে নিজের করণীয় বা আচরণ সম্পর্কে সচেতন হবে। একইসঙ্গে পারস্পরিক মূল্যবোধ ও সম্মানবোধ সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে সবাই সচেষ্ট হবে। বুদ্ধের বাণী ও শিক্ষা-এ আহ্বান নিয়েই বিকশিত হয়েছে। মানুষে মানুষে এই অকৃত্রিম আন্তরিক সম্পর্ক হলো পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতার পরিচায়ক। এরকম আন্তঃসম্পর্কের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে যে পারস্পরিক সহায়তা ও সহানুভূতির বোধ সৃষ্টি হয়, সেটিই হলো পরমতসহিষ্ণুতা। পারস্পরিক প্রীতি সম্পর্ক সৃষ্টিতে এর চর্চার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। এই চর্চা হবে অসাম্প্রদায়িক এবং সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে, যা মানুষের - মনুষ্যত্ববোধ ও মানবিকতাকে বিকশিত করবে। এর জন্য মানুষের সৎ ও ন্যায়পরায়ণ হওয়া যেমন প্রয়োজন, - তেমনি পরমতসহিষ্ণু হওয়াও একান্ত আবশ্যক। এই পরমতসহিষ্ণুতা হলো অপরের মতাদর্শ বা মতামতকে শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে বিবেচনা করা। পরমতসহিষ্ণুতা ছাড়া পরস্পরের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে না; আন্তঃ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও সৃষ্টি হয় না। পরমতসহিষ্ণুতা ঐক্য ও সম্প্রীতির অনন্য উৎস।

common.content_added_and_updated_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion